বাহিরানা ডেস্ক
আমিনুল ইসলাম ভুইয়া দীর্ঘকাল যাবত দর্শন নিয়ে কাজ করছেন। প্লেটোকে নিয়ে তার কাজগুলো এদেশের চিন্তার জগতে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন বলা যায়। ইতোমধ্যে “দর্শনের ইতিহাস”-এর রচয়িতা দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের অনেকগুলো প্রবন্ধের অনুবাদ ও তার চিন্তা নিয়ে বই আমরা আমিনুল ইসলামের কাছ থেকে পেয়েছি। তারই ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত হয়েছে “দার্শনিক প্রবন্ধাবলি : বার্ট্রান্ড রাসেল”। অনুবাদকের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি এই বইটি রাসেলের চিন্তার বিকাশের একটি মাইলফলক।
যেমন সত্য নিয়ে আমরা কী কী প্রশ্নের মুখোমুখি হই, “সত্য কী মস্তিষ্কের উপর নির্ভর করে আর সত্য কী এক নাকি বহু।” তা তিনি প্রথমেই বিবেচনায় নিয়েছেন। এইভাবে তিনি বিশ্লেষণ করতে করতে এগিয়ে যান, এরপর সিদ্ধান্তে উপনীত হন। একই কথা বলা যায় আলোচিত প্রতিটি বিষয় নিয়েই। যেমন “নৈতিকতা” এই বিষয়টির মুখোমুখি হলে প্রথম যে ভাবনাগুলো আমাদের মধ্যে আসে সেগুলো হলো, “কোন ধরণের কাজগুলো করা উচিত আর কোনগুলো পরিহার করা উচিত।”
রাসেল বইটিতে নৈতিকতা, ইতিহাস, প্রয়োগবাদ, বিজ্ঞান, হাইপোথিসিস, সত্যের মনিস্টিক থিউরি, উইলিয়াম জেমসের সত্যের ধারণা, সত্য ও মিথ্যার প্রকৃতি—নিয়ে আলোচনা করেছেন সাতটি অধ্যায়ে। বিষয়গুলো আমাদের জীবনের অঙ্গ, যেহেতু ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পরিসরে মানুষ ইতিহাস ও সত্য ছাড়া—জড় পদার্থ বৈ কিছু নয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত “ইতিহাস” বিষয়টি চিন্তার বিভিন্ন স্কুলে একেকরমক, যেমন সমাজতন্ত্র আর পুঁজিবাদে ইতিহাসের ধারণা একইরকম নয়। বইয়ে উল্লেখিত সব বিষয়ই এরকম। রাসেল সেসব বিবেচনায় নিয়েই তার চিন্তাকে এগিয়েছেন, যেভাবে প্রত্যেকটি নতুন চিন্তাকে তার সমসাময়িক ও পূর্ববর্তী চিন্তার মোকাবেলা করতে হয়, রাসেলও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নন।
যেমন সত্য নিয়ে আমরা কী কী প্রশ্নের মুখোমুখি হই, “সত্য কী মস্তিষ্কের উপর নির্ভর করে আর সত্য কী এক নাকি বহু।” তা তিনি প্রথমেই বিবেচনায় নিয়েছেন। এইভাবে তিনি বিশ্লেষণ করতে করতে এগিয়ে যান, এরপর সিদ্ধান্তে উপনীত হন। একই কথা বলা যায় আলোচিত প্রতিটি বিষয় নিয়েই। যেমন “নৈতিকতা” এই বিষয়টির মুখোমুখি হলে প্রথম যে ভাবনাগুলো আমাদের মধ্যে আসে সেগুলো হলো, “কোন ধরণের কাজগুলো করা উচিত আর কোনগুলো পরিহার করা উচিত।”
রাসেল আমাদেরকে সভ্যতার ভিত্তিমূল এই বিষয়গুলোর ধারণা যে জায়গা থেকে গড়ে উঠেছে সেখানে নিয়ে যান, একজন প্রকৃত চিন্তাবিদ তার সহযাত্রীদের যেভাবে দর্শনের সাথে পরিচয় করান রাসেলও সেভাবেই তার যুক্তিকে বিস্তৃত করেন। এখন পর্যন্ত বিজ্ঞান আর দর্শন এগুলো নিয়ে কী কী আবিষ্কার আর সিদ্ধান্ত জানিয়েছে তা-ও ভালোভাবে পরখ করেন তিনি।
বইয়ের প্রবন্ধগুলোকে নৈতিকতা আর সত্যের গভীর অনুসন্ধান হিসেবে দেখা যায়। বইটি শুধু যে দর্শনের শিক্ষার্থীদের জন্যেই তা নয় এটি দর্শনানুরাগী আর সাধারণ পাঠকদের জন্যেও। তাই ভাষাও সহজবোধ্য, প্রাঞ্জল। বলা যায় রাসেলের দুরূহ কাজটিকে আমিনুল ইসলাম ভুইয়া সহজ বাংলায় নিয়ে এসেছেন। রাসেলের নিজস্ব চিন্তার দিকে যাওয়ার জন্য ও এর অভিমুখ জানার জন্য বইটি অবশ্যপাঠ্য বলা যায়।
দার্শনিক প্রবন্ধাবলি : বার্ট্রান্ড রাসেল
অনুবাদ : আমিনুল ইসলাম ভূইয়া
প্রকাশনী : প্রথমা প্রকাশন
প্রকাশকাল : ২০২৪
দাম : ৫০০ টাকা।
বইটি কিনতে :
দার্শনিক প্রবন্ধাবলি : বার্ট্রান্ড রাসেল—অনুবাদ আমিনুল ইসলাম ভুইয়া – বাহিরানা (bahirana.com)