মৃত্যুর কিছুকাল পূর্বে ব্রিটিশ লেখক ও সমালোচক সি. এস. লুইস (১৮৯৮-১৯৬৩)-এর কাছে ১৯৫৯ সালে আমেরিকার এক বিদ্যালয়ের তরুণী শিক্ষার্থী লেখালেখি নিয়ে পরামর্শ চেয়েছিল। তিনি সেই পরামর্শে লেখার আটটি নিয়মের কথা বলেছিলেন, যা আজও প্রাসঙ্গিক। কারণ সেগুলো তিনি তার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আহরণ করেছেন। যারা নতুন লিখতে এসেছেন তাদের জন্যে ও যারা কিছু সময় অতিবাহিত করেছেন তারাও নিজেদের কাজকে ঝালাই করতে এই ছোট ছোট কিন্তু হীরকখণ্ডতুল্য পরামর্শ থেকে লাভবান হতে পারেন। লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন দিপু চন্দ্র দেব।–সম্পাদক ফিচার ডেস্ক
লেখালেখি সম্পর্কে সাধারণ পরামর্শ দেওয়া খুব কঠিন। তবুও আমার চেষ্টা হলো এই—
১. রেডিও বন্ধ করো।
২. যত ভালো বই পারা যায় পড়ে ফেলো, আর প্রায় সব ম্যাগাজিন এড়িয়ে চলো।
৩. সর্বদা কানের সাহায্য নিয়ে লেখো (এবং পড়ো), চোখের নয়। তুমি যেই বাক্য লিখবে তা তোমাকে শুনতে হবে, যেন সেটি জোরে পড়া বা বলা হচ্ছে। যদি সেটি সুন্দর না শোনায়, আবার চেষ্টা করো।
৪. লেখ শুধু যা নিয়ে তুমি সত্যিই আগ্রহী, সে বাস্তব হোক বা কল্পনা, অন্য কিছুই না। (খেয়াল রাখো: শুধু ‘লেখা’ নিয়ে আগ্রহ থাকলে তুমি কখনোই লেখক হতে পারবে না, কারণ লিখবার মতো কোনো বিষয়ই থাকবে না তোমার।)
৫. স্পষ্ট হওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করো। মনে রেখ, তুমি নিজে যে অর্থ জেনে শুরু করেছো, পাঠক সেটা জানে না। এবং একটি ভুল শব্দচয়ন পুরো বোঝাবুঝির ব্যাপারটিকেই ব্যর্থ করে দিতে পারে। গল্পে এটা ভুলে যাওয়া ভয়ানকভাবে সহজ যে তুমি পাঠককে কিছু প্রয়োজনীয় বিয়ষ-আশয় বলোনি যা তার জানা প্রয়োজন—তোমার মস্তিষ্কে পুরো ছবিটাই এত স্পষ্ট যে তুমি ভুলে গেছ তার মস্তিষ্কে সেটি তোমার মতো করে নেই।
৬. কোনো লেখা অসমাপ্ত রেখে ছেড়ে দিলেও, সেটা (যদি না এটা আশাহীনভাবে খারাপ হয়) ফেলে দিও না। একটা ড্রয়ারে রেখে দাও। সেটা পরে কাজে লাগতে পারে। আমার নিজের সেরা কাজগুলো বা যেগুলোকে আমি সেরা মনে করি—তাদের অনেকগুলোই অনেক বছর আগে শুরু করে ছেড়ে দেওয়া লেখার পুনর্লিখন।
৭. টাইপরাইটার ব্যবহার করো না। এর শব্দ তোমার ছন্দবোধ নষ্ট করবে, যা এখনো বহুবছরের প্রশিক্ষণের অপেক্ষায়।
৮. তোমার ব্যবহৃত প্রতিটি শব্দের অর্থ (বা একাধিক অর্থ) জানা নিশ্চিত করো।