রবার্ট এগার্সের সবচেয়ে বড় সফলতা তো এটাই, মুর্নাউ; হেৎ্সগের মতো গ্রেট ফিল্মমেকারদের ‘নসফেরাতু’র সামনে, তার এই নতুন ‘নসফেরাতু’ (২০২৪) খাটো হয়ে পড়েনি! মুর্নাউয়ের ভার্সন, স্টোকারের ‘ড্রাকুলা’—দুটোকে এক করে একটা চমৎকার প্রভোকেটিভ পিস হয়েছে এগার্সের এই ভার্সন। এবং হেৎ্সগের ‘নসফেরাতু’র চিত্রনাট্যকে উপন্যাসে রূপ না দেওয়া হলে, এই রবার্ট এগার্সের নসফেরাতু’র (২০২৪) চিত্রনাট্যই পেতে পারত সেই রূপ! কিংবা এখনো পেতে পারে।
অবসেশন আর সিডাকশনের এই সিনেমার সৌন্দর্যে নিমজ্জিত হওয়াটা খুব অনায়সে ঘটে যায়। মহামারীকে পেছনে রেখে লোভ, ক্ষমতা, আচ্ছন্নতা আর কামুকতার এই গল্পটা কিন্তু সিনেমার মূল টেক্সট আর ভেতরকার বক্তব্য; দুই জায়গাতেই প্যারালাল রাখে।
ক্লাসিকাল মেজাজে ভারী এই গথিক হররের টেক্সট এতখানিই মসৃণ আর গভীর যে, ভিজ্যুয়ালের ভেতর দিয়েই ওটা সুস্পষ্ট পড়তে পারা যায়। ছন্দে, স্ট্রাকচারে, সংলাপের ইকোনমিতে সমৃদ্ধ। নিবিড় সব লেয়ার তো রইলোই। কোনকিছুতে ‘অতি’ কিছু নেই, গতিতে অদম্য; পরিচ্ছন্ন। গথিক মেজাজে অনবদ্য। ব্যাসিকটা দিয়েই, গথিকের ক্লাসিক নির্মিতি। সিনেমাটোগ্রাফিতে একটা মনুমেন্টাল পিস! ‘পজেশন’—এর মতো ভিসিরাল, আবার ‘দ্য এক্সরসিস্ট’ প্রতিধ্বনি পাওয়া যায় হিস্টিরিয়া ক্যাপচারে। পিরিয়ডিক ডিটেলের জায়গায়, নিখুঁত। এগার্স ইচ্ছে করেই সেটাকে একটু বেশি নজরে পড়তে দিয়েছেন। ঠিক আত্মনিমগ্নতা না (ওটা তো এমনিতে আছেই), কালচারের দিক থেকে সময়টাকে অনুনাদি করতে আর একটা সূক্ষ্ম রসবোধও ধরে রাখতে—এই আলাদা ‘দৃষ্টি’ দেওয়া বোধহয়৷ নাহয়, পিরিয়ড পিস তো তার ‘দ্য নর্থম্যান’ও ছিল।

অবসেশন আর সিডাকশনের এই সিনেমার সৌন্দর্যে নিমজ্জিত হওয়াটা খুব অনায়সে ঘটে যায়। মহামারীকে পেছনে রেখে লোভ, ক্ষমতা, আচ্ছন্নতা আর কামুকতার এই গল্পটা কিন্তু সিনেমার মূল টেক্সট আর ভেতরকার বক্তব্য; দুই জায়গাতেই প্যারালাল রাখে। দৃষ্টি প্রশস্ত করলে গোটা সমাজটাই ধরা দেয় আরকি। তা যাক।
তবে এরকম ‘র’ ইরোটিসিজমকে ডিল করাটা ছিল অপ্রত্যাশিত, আর, একটা মাস্টারস্ট্রোক! রবার্ট এগার্সের নসফেরাতু ২০২৪ সিনেমার গথিক টেনশনের প্যালপ্যাবল রূপটায় ভয় আর উত্তেজনা, কামুক এক ভঙ্গীতে খেলা করছিল (মারিও বাভা’র ‘ব্ল্যা’ক সানডে’র কথা মনে পড়ে গেল), সেরিব্রাল একটা রূপ পেয়েছে গল্প এবং চরিত্রগুলো যার কারণে! আহা! সুন্দর, মোহনীয়। ইংরেজিতে এক বাক্যে প্রকাশ করা যায় এই বলে; “সিডাক্টিভলি হ্যন্টিং এন্ড বিউটিফুল”।
নসফেরাতু
পরিচালক: রবার্ট এগার্স
জনরা: গথিক হরর
প্রকাশকাল: ২০২৪
সময়: ১৩২ মিনিট।
