বাহিরানা

হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ ১০ উপন্যাস


হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ ১০ উপন্যাস বিষয়ে বলতে গেলে দ্বন্দ্বে পড়তে হয়। কারণ বিশ্বজুড়েই কিছু লেখক আছেন যাদের সব লেখাই সেরা। এর উৎস সন্ধানও একটু জটিল। তবে মোটাদাগে যে কারণ পাওয়া যায় তা হলো এই লেখকেরা একটি নিজস্ব ভাষা আবিষ্কার করেছেন। আরেকটু এগিয়ে গেলে দেখতে পাওয়া যাবে তাদের মধ্যে দুইটি শ্রেণী আছে, একটি শ্রেণীতে আছেন সেই লেখকেরা যাদের নিজস্ব ভাষা আছে কিন্তু তারা জনপ্রিয় লেখক নন, আরেক শ্রেণীর লেখকেরা আছেন যাদের নিজস্ব ভাষার সাথে তারা জনপ্রিয়ও। এই জনপ্রিয় শ্রেণীতে পড়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। বর্তমান বিশ্বে যার বিপুল পাঠকগোষ্ঠীর তুলনা করা যায় শুধুমাত্র একজন লেখকের সাথেই তিনি জাপানের হারুকি মুরাকামি। হুমায়ূন বিচিত্র বিষয়ে লিখেছেন, তার লেখার বিষয়বস্তুর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, সাইন্স ফিকশন, মিসির আলী, হিমু সিরিজ, ভ্রমণ। তিন বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সুখ-দুঃখ, জীবন সংগ্রামকে তার লেখায় এমনভাবে নিয়ে এসেছিলেন যে মধ্যবিত্তশ্রেণী এখনও তার ভাবধারা দ্বারা প্রভাবিত। তার ভাষা সহজ কিন্তু সতেজ, প্রাণপ্রাচুর্য পূর্ণ, তিনি তাই তার গদ্যে পাঠকদের অধিকার করে ফেলেন। এই একটিমাত্র বিষয় বিবেচনা করলেও তার সব লেখাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তিনি দু‘হাত ভরে লিখেছেন। তাই তার বইয়ের সংখ্যাও কম নয়, সেই অসংখ্য বই থেকে এখানে আমরা পাঠকদের জন্য হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ ১০ উপন্যাস-এর একটি তালিকা তৈরি করলাম।


নন্দিত নরকে: হুমায়ূন আহমেদের নন্দিত নরকে উপন্যাস নিয়ে বইটির ফ্লাপে শামসুর রাহমান লিখেছিলেন, “এ কথা বলতে আমার বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই যে, তিনি ভবিষ্যতে আমাদের সাহিত্যের ইতিহাসে কিংবদন্তির মর্যাদা পাবেন।” ড. আহমদ শরীফের তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত হয়েছিল বইটি ১৯৭২ সালে। ভূমিকাও লিখেছিলেন তিনি। আকারে ক্ষুদ্র কলেবরের উপন্যাসটির বিষয়বস্তু নিখাদ মধ্যবিত্তর একটি পরিবারের গল্প। মা, বাবা ও চার ভাইবোনে (রাবেয়া যাকে রাবু নামে ডাকা হয়, মন্টু, খোকা ও রুনু) গল্প। তাদের সংসারের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার চিত্র এঁকেছেন লেখক। ভাইবোনের সবাই নিজেদের ভবিষ্যৎ নিযে ব্যস্ত থাকলেও—যেমন পড়াশোনা, খেলা—রাবেয়া একটু অন্যরকম। সে মানসিক প্রতিবন্ধী। তাদের পরিবারে আরেকজন মানুষ আছে যে তাদের বাবার বন্ধু। সে তাদের পড়ায়। সবকিছুই সুন্দরভাবে চলছিল। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন ঘটে পরিবারটির। সবার আদেরর বোন রাবেয়া একটি হঠাতই গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এ ঘটনার পরেই উপন্যাসটি ভিন্নদিকে মোড় নেয়। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে অবিবাহিতা মেয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়লে যে সমাজে যে কী অপমানিত হতে হয় তার সীমা নেই। কিন্তু রাবেয়া তো মানসিক প্রতিবন্ধ্বী, সহজ স্বাভাবিক মানুষের মতো তার ভালো-খারাপের জ্ঞান নেই। সবাইকেই শিশুর মতো সে আপন মনে করে। আর বাইরের কারও সাথে সে মেশেও না তার বন্ধু-বান্ধব না থাকাই স্বাভাবিক। স্বভাবতই পাঠকদের সন্দেহের তীর গিয়ে পড়ে মাস্টারের দিকে। যে রাবেয়ার সারল্যের সুযোগ নিয়েছে। বইটিতে বাংলাদেশের পারিবারিক বন্ধনের সার্থক রূপায়ন ঘটেছে, হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস-এর মধ্যে যে দুইটি উপন্যাসকে তার শেষ্ঠ কাজ বলে ভাবা হয় তার মধ্যে এই উপন্যাস একটি, অন্যটি শঙ্খনীল কারাগার।

নন্দিত নরকে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস
নন্দিত নরকে উপন্যাসের প্রচ্ছদ।

শঙ্খনীল কারাগার: এই উপন্যাসের বিষয়বস্তু এরকম, বড় ঘরের মেয়ে শিরিন সুলতানার সাথে তাদের বাড়িতে আজহার হোসেন নামের একজনের বিয়ে হয়। শিরিন সুলতানার আগে একবার বিয়ে হয়, তার বর্তমান স্বামী আজহার হোসেন বি.এ পাশ হলেও অর্থবিত্ত নেই। শিরিন গান গাইতে পছন্দ করতেন কিন্তু বিয়ের পর আর রেওয়াজ করা হয়নি। তার আর কখনও বাবা মায়ের ঘরেও ফেরা হয়নি। তাদের সংসারে জন্ম নেয় খোকা, রুনু, ঝুনু, মন্টু এবং নিনু। শিরিন একদিন এই জগতকে বিদায় জানান। উপন্যাসটি বর্ণিত হয় খোকার জবানিতে। সে তার খালাত বোন কিটকির প্রেমে পড়ে কিন্তু মেয়েটির অনত্র বিয়ে হয়ে যায়। তার বোন রাবেয়ার বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। নিনু ও মন্টু তাদের তাদের মতো করে একটা জগৎ তৈরি করে নিয়েছে। হুমায়ুন আহমেদ এই পরিবারটির প্রত্যেকের মনোজগতে পাঠকদের ভ্রমণ করান, যারা প্রত্যেকেই অন্যদের বিষয়ে অনবহিত। একটা অদৃশ্য দেয়াল আড়াল করে রেখেছে তাদের পরস্পর থেকে। যেমন তাদের মা অভিজাত বংশের বলে তিনি কখনও এই সংসারে আজহার হোসেনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি, ছেলেমেয়েরাও তার স্নেন-ভালোবাসা পায়নি। আধুনিক সমাজের নিসঙ্গতার মূর্ত রূপ যেন এই উপন্যাসটি। আর এর চরিত্ররা সেই সেই সমাজেরই প্রতিনিধি, যারা পাশাপাশি থেকেও কেউ কাউকে চেনে না। হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের তালিকা করলে এই বইটিকে স্থান না দিলে সেটি খণ্ডিত হতে বাধ্য। হুমায়ূন আহমেদের যে ভাষা পাঠকদেরকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে, তার সার্থক উদারণ তিনি এই বইটিতে তৈরি করেছিলেন।

শঙ্খনীল কারাগার হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস
শঙ্খনীল কারাগার উপন্যাসের প্রচ্ছদ।

ব্যক্তিগতভাবে হুমায়ূন আহমেদ কেমন ছিলেন তা জানাতে কথা সাহিত্যিক ড. আসিফ নজরুলের কয়েকজন হুমায়ূন আহমেদ বইটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। বইটির রিভিউ প্রকাশিত হয়েছে বাহিরানায় পড়তে পারেন:

আসিফ নজরুলের কয়েকজন হুমায়ূন আহমেদ বই রিভিউ – বাহিরানা

১৯৭১: হুমায়ূন আহমেদের আগ্রহের একটি বিশেষ জায়গা হলো মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭১ উপন্যাসটি একাত্তর সাল নিয়ে, ময়মনসিংহের নীলগঞ্জে পাকিস্তানি বাহিনীর আগমন ও তৎপরবর্তী ঘটনাবলী নিয়ে গড়ে উঠেছে উপন্যাসটি। পাকিস্তানী মেজরের সাথে নীলগঞ্জ গ্রামের মানুষদের বিরোধই উপন্যাসের মূলবিন্দু। যে নীলগঞ্জ সমগ্র বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে উঠেছে এখানে। হুমায়ূন আহমেদের সেরা উপন্যাসের তালিকাতেই শুধু নয়  মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উপন্যাসের তালিকাতেও এই বইটি উপরের সারিতে স্থান পাবে।

১৯৭১ উপন্যাসের প্রচ্ছদ। একটি পায়ের পাতার ছবি আছে এখানে।
১৯৭১ উপন্যাসের প্রচ্ছদ

আগুনের পরশমণি: ১৯৭১ সালে বদিউল আলম নামের এক গেরিলা যোদ্ধ্বার ৭জনের একটি টিম নিয়ে ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধের ঘটনার উপর গড়ে উঠেছে “আগুনের পরশমণি”। উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। তার মিশন সম্পন্ন করার জন্য সে মতিন সাহেবের বাসায় ওঠে। সেখানে তার সাথে মতিন সাহেবের মেয়ে রাত্রির পরিচয় হয়। রাত্রি বদিউলের মধ্যে থাকা নিঃঙ্গতা, দেশপ্রেম ও সাহসিকতা দেখে তার প্রেমে পড়ে যায়। বিয়োগান্তক এই উপন্যাসটিতে ব্যক্তির আবেগ ও বাস্তবতার দ্বন্দ্বের দারুণ সংমিশ্রণ ঘটেছে।

আগুনের পরশমণি উপন্যাসের প্রচ্ছদ। অনেকগুলো শাপলার ছবি আছে এখানে, বইয়ের নামলিপি আছে।
আগুনের পরশমণি উপন্যাসের প্রচ্ছদ

হলুদ হিমু কালো র‌্যাব: “হলুদ হিমু কালো র‌্যাব” উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৬ সালে। হিমু সিরিজের মধ্যে এই উপন্যাসটি অন্যরকম স্থান অধিকার করে আছে। কারণ এখানে বাংলাদেশের রূঢ় বাস্তবতা ও হুমায়ূন আহমেদের রাজনীতি সচেতনার বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাই আমরা। ২০০৬ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর যতই দিন গড়িয়েছে পরিস্থিতি ততই হুমায়ূন বর্ণিত উপন্যাসের আকার নিয়েছে। একজন বড় ঔপন্যাসিক যে ভবিষ্যৎদ্রষ্টা হন হুমায়ূন তার উদাহরণ। তাই হুমায়ূন আহমেদের সেরা উপন্যাস-এর তালিকা করলে এই বইটি সেখানে স্থান পাবেই।

হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ ১০ উপন্যাস তালিকায় হলুদ হিমু কালো র‍্যাব এর প্রচ্ছদ। দুইজন মানুষের প্রতিকৃতি আছে এখানে।
হলুদ হিমু কালো র‍্যাব উপন্যাসের প্রচ্ছদ

নি: “নি” উপন্যাসটি কল্পবিজ্ঞানের। এবং হুমায়ূন আহমেদের কল্পবিজ্ঞান নিয়ে লেখার মধ্যে অন্যতম বিশেষ। এই উপন্যারে ঘটনাবলীও ১৯৭১ উপন্যাসের নীলগঞ্জ নামে এক গ্রামে ঘটে। নি এখানে মহাবিশ্বের এলিয়েন গোত্রের, যারা প্রকৃতিতে বিশেষ কাজে আসে। উপন্যাসের মূল চরিত্র মবিনুল নীলগঞ্জ হাইস্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক, সে আসলে একজন নি। কিন্তু বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয় সে। উপন্যাসটি কল্পবিজ্ঞানের হলেও এতেও বাস্তবতার পরিমাণ যথেষ্ট রয়েছে।

নি উপন্যাসের প্রচ্ছদ। অনেকগুলো মুখের ছবি আছে এখানে।
নি উপন্যাসের প্রচ্ছদ

অপেক্ষা: নামের মতোই এই উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু অপেক্ষা। হাসানুজ্জামান ও তার স্ত্রী সুরাইয়া, তাদের একটি সন্তান আছে। এই পরিবারে হাসানুজ্জামানের ছোট ভাইও থাকে। সবকিছুই সুন্দরভাবে চলছিল কিন্তু হঠাৎ একদিন হাসানুজ্জামান আর বাড়ি ফেরে না। সুরাইয়া এই ঘটনায় ভেঙে পড়ে কিন্তু হাল ছাড়ে না, সে যা করে তা হলো দিনের পর দিন বছরের পর বছর স্বামীর ফিরে আসার অপেক্ষা করে। এর মধ্যে সন্তানের যে স্নেহ প্রাপ্য এবং তারও যে একটা জীবন আছে সেটা সে ভুলে যায় বা অবহেলা করে। অপেক্ষাকে কেন্দ্র করে এরকম বই খুব কমই লেখা হয়েছে। মানুষের জীবনের এই ঘটনাটিকে প্রায়শই এড়িয়ে যাওয়া হয়, এটা জীবনের খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। আমরা প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু, কারও না কারও অপেক্ষা করি। কেউ হয়তো চাকরির, কেউ নতুন জীবনের, কেউবা হারিয়ে যাওয়া কোনো প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়ার। এ ছাড়া জীবন অসম্ভব একটা ব্যাপার। এই বইটি আমাদের প্রাত্যহিক সেই অপেক্ষাকেই শিল্পে রূপান্তরিত করেছে।

অপেক্ষা উপন্যাসের প্রচ্ছদ। বিপরীতমুখি দুইজন নারীর মুখ আছে এখানে।
অপেক্ষা উপন্যাসের প্রচ্ছদ

নিশীথিনী: মিসির আলি সিরিজের কথা না বললে হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ বইয়ের তালিকা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। “নিশীথিনী” উপন্যাসটি সিরিজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ফিরোজ নামের একজনের ‍উন্মাদ হয়ে যাওয়া ও তৎপরবর্তী ঘটনার কথা শোনান হুমায়ূন। সে বন্ধুর বাড়িতে এক গাছের মধ্যে চশমা পড়া লোককে দেখে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে ধীরে ধীরে বাস্তবতাবোধ হারিয়ে ফেলে। মানুষকে লোহার রড দিয়ে মারতে শুরু করে সে। মিসির আলী এর তদন্তে নেমে ফিরোজের পূর্বপুরুষের সঙ্গে ঘটনার সূত্র খুঁজে পায়। নিলু এবং তার দেবীও রয়েছে উপন্যাসটিতে। খুবই টানটান আর বিস্ময়ে পূর্ণ নিশিথিনী।

নিশীথিনী উপন্যাসের প্রচ্ছদ। দুইটি ভাঙা মূর্তির ছবি আছে এখানে।
নিশীথিনী উপন্যাসের প্রচ্ছদ

ভয়: হুমায়ূন আহমেদের প্রিয় লেখকদের একজন স্টিফেন কিং। এ কথা তিনি বহুবার বলেছেন। তিনি নিজেও অনেক ভৌতিক গল্প লিখেছেন। “ভয়” একটি সংকলন গ্রন্থ, এখানে তার তিনটি ভয়ের গল্প স্থান পেয়েছে। এখানে মিসির আলীর ভয়ের গভীরে প্রবেশ করার পদ্ধতিগুলো চমকজাগানিয়া ও ভিন্ন। রহস্যও যে অন্যমাত্রা পেয়েছে বইটিতে। তবে, সবগুলোই গল্পই অনন্য অসাধারণ ভয় জাগানিয়া। হুমায়ূন আহমেদের ভয়ের গল্প বা উপন্যাসের তালিকা করলেও, দুটিতেই এই উপন্যাসটি স্থান পাবে।

ভয় উপন্যাসের প্রচ্ছদ। অনেকগুলো ব্লেডের ছবি আছে এখানে।
ভয় উপন্যাসের প্রচ্ছদ

হুমায়ূন আহমেদ অসংখ্য ভ্রমণগদ্য লিখেছেন। তার সবগুলো দুই মলাটবদ্ধ হয়ে আসা দারুণ ব্যাপার পাঠকদের জন্য। হুমায়ূন আহমেদের ভ্রমণসমগ্র বইটির একটি রিভিউ প্রকাশিত হয়েছে বাহিরানায়, পড়তে পারেন:

হুমায়ূন আহমেদের ভ্রমণসমগ্র বই রিভিউ – বাহিরানা

বাদশাহ নামদার: হুমায়ূন আহদের আগ্রহের আরেকটি জায়গা ইতিহাস। এই বিষয়ে তার শ্রেষ্ঠ বই হলো “বাদশাহ নামদার”। উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ২০১১ সালে। মুগল সম্রাট বাবরের সন্তান হুমায়ূন অসুস্থ হলে নিজের আয়ুর বিনিময়ে তার সুস্থতা প্রার্থনা করেছিলেন তিনি। এই ঘটনাকে উপজীব্য করে সম্রাট হুমায়ূনের জীবনের উত্থান-পতন তুলে ধরেছেন তিনি এই উপন্যাসটিতে। ঐতিহাসিক ও শিল্পের বিবেচনা—দুইদিকেই সম্মৃদ্ধ হুমায়ূন আহমেদের এই বইটি।

হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ ১০ উপন্যাস এর তালিকায় বাদশাহ নামদার বইয়ের প্রচ্ছদ। বইয়ের নামলিপি ও তৈলচিত্র আছে এখানে।
বাদশাহ নামদার উপন্যাসের প্রচ্ছদ

ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ ১০ উপন্যাসের তালিকা করা একটি অসম্ভব কাজ। আর পাঠকদের নিজেদের পছন্দের কথা বিবেচনা করলে তো সেটি আরো কঠিন এক কর্ম। যেমন এই তালিকায় তার অসম্পূর্ণ উপন্যাস “দেয়াল” অনায়াসে স্থান করে নিতে পারে। তার ভ্রমণ গদ্যের বইগুলোর কথা তো আছেই। তবে আমাদের এই তালিকাবদ্ধ বইগুলো পড়লে পাঠকেরা বৈচিত্রপূর্ণ ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের সাক্ষাৎলাভ করবেন। যে লেখক বিচিত্র বিষয়ে সিদ্ধহস্ত হয়ে মহাকালের সাথে বাজি ধরেছিলেন। যিনি শিল্প ও দক্ষতার আকাশে বিচিত্র মেঘমালার শিখর স্পর্শ করেছিলেন। শুভপাঠের কামনায়।

 


মন্তব্য করুন