দিপু চন্দ্র দেব
আলোকচিত্র বা ফটোগ্রাফি যে একটি শিল্প সেটি প্রতিষ্ঠা হতে অনেক সময় লেগেছে। কিন্তু আলোকচিত্র যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব বা তাকে আবিষ্কার করা সম্ভব সেটিই একসময় অকল্পনীয় ছিল। ফরাসি দেশের “লুই ডাগুয়ের” নামে এক ব্যক্তি আজ থেকে ১৯০ বছর আগে সেটি বাস্তবায়ন করে করেছিলেন। তাকে মানুষ উন্মাদ ভাবতে শুরু করেছিল, কারণ কারো ধারণাই ছিল না বাস্তবতাকে এভাবে ধারণ করা যায়। এরপর কালে কালে বিশ্বজুড়ে আলোকচিত্রে অনেক রথী মহারথী এসেছেন, যারা আলোকচিত্রের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে গেছেন কেবল, বর্তমানেও তাই। আর সেইসাথে তাদের অনেকেই এই শিল্পমাধ্যমটি নিয়ে লিখেছেনও, যেগুলো মাধ্যমটির প্রতি আগ্রহী ও ছাত্রদের নতুন নতুন ব্যাখ্যা ও শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে। এই মাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণজন শাহাদাত পারভেজের “আলোকচিত্রপুরাণ: বাংলায় ফটোগ্রাফির আদি প্রবন্ধ” সেই প্রবন্ধগুলো নিয়েই, এগুলো তিনি সংগ্রহ ও সম্পাদনা করেছেন। আর একটি সম্মৃদ্ধ ভূমিকাও লিখেছেন।
বইটির বিশেষত্ব হলো, এখানে সূচীবদ্ধ লেখাগুলো আলোকচিত্রের আদি প্রবন্ধ। যা সহজে পাওয়া সম্ভব নয়, বিভিন্ন পত্রিকায়, বইয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে সেগুলো। কিন্তু শাহাদাত পারভেজ লেখাগুলোকে দুই মলাটবদ্ধ করায়, পাঠকেরা সম্মৃদ্ধ হবেন। আবার একইসাথে আলোকচিত্র বর্তমানে যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে সেটিও সম্যকভাবে বুঝে যাওয়া সম্ভবপর হবে। যেমন ফটোগ্রাফি যে একটি শিল্প, আর সেটি নিয়ে প্রথমদিকের আচার্য্যরা কী ভাবতেন? আর্য্যকুমার চৌধুরী’র “ফটোগ্রাফীর মাধ্যমে সৌন্দর্য আবিষ্কার” রাজকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের “আলোকচিত্র সাহায্যে সুরের রূপ পরীক্ষা” এই লেখাগুলো তা জানাতে পারে।
বইটি “নবজাগরণের স্বর্ণসময় ও বাংলায় ফটোগ্রাফিচর্চা” ভূমিকাপ্রবন্ধ দিয়ে শুরু হয়েছে। এখানে বাংলায় আলোকচিত্রের সূচনার ইতিহাস থেকে এর বিবর্তন—সবই তুলে ধরেছেন শাহাদাত পারভেজ। “শিল্পপুষ্পাঞ্জলি” নামে শিল্পবিষয়ক প্রথম পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল জোড়াসাঁকো থেকে, সম্পাদক ছিলেনে অমৃতলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই আবার আলোকচিত্র নিয়ে প্রথম ধারাবাহিক লেখা শুরু করেন পত্রিকাটিতে। বইটিতে তার লেখা সহ এসেছে “সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর” “রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী” “উপন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী” থেকে “গোলাম কাসেম”সহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ নাম।
বইটির বিশেষত্ব হলো, এখানে সূচীবদ্ধ লেখাগুলো আলোকচিত্রের আদি প্রবন্ধ। যা সহজে পাওয়া সম্ভব নয়, বিভিন্ন পত্রিকায়, বইয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে সেগুলো। কিন্তু শাহাদাত পারভেজ লেখাগুলোকে দুই মলাটবদ্ধ করায়, পাঠকেরা সম্মৃদ্ধ হবেন। আবার একইসাথে আলোকচিত্র বর্তমানে যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে সেটিও সম্যকভাবে বুঝে যাওয়া সম্ভবপর হবে। যেমন ফটোগ্রাফি যে একটি শিল্প, আর সেটি নিয়ে প্রথমদিকের আচার্য্যরা কী ভাবতেন? আর্য্যকুমার চৌধুরী’র “ফটোগ্রাফীর মাধ্যমে সৌন্দর্য আবিষ্কার” রাজকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের “আলোকচিত্র সাহায্যে সুরের রূপ পরীক্ষা” এই লেখাগুলো তা জানাতে পারে।
শিল্পমাধ্যমের মধ্যে ফটোগ্রাফি সবচেয়ে নতুন, কিন্তু এরও ইতিহাস আছে। কতজন যে কত বিচিত্রভাবে লিখেছেন! বইটি না পড়লে বোঝা যায় না। যেমন, উপেন্দ্রকিশোর লিখেছেন “হাফটোন্ ছবি” সতীশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় “চৈত্রিক ফটোগ্রাফি” চারু বন্দ্যোপাধায় “টেলিফটোগ্রাফি”। এই টেলি ফটোগ্রাফি বর্তমান মোবাইল ক্যামেরার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিটি কোম্পানিই নতুন নতুন লেন্স যুক্ত করছে। অথচ কত আগে চারু বন্দ্যোপাধ্যায় এটা নিয়ে লিখে ফেলেছিলেন।
“আলোকচিত্রপুরাণ” যারা ফটোগ্রাফি চর্চা করেন বা এর ইতিহাস জানতে চান সবাইকেই পাঠতৃপ্তি দেবে। এরকম বই আলোকশিল্প চর্চার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে এতে সন্দেহ নেই।
আলোকচিত্রপুরাণ: বাংলায় ফটোগ্রাফির আদি প্রবন্ধ
সংগ্রহ ও সম্পাদনা : শাহাদাত পারভেজ
বিষয় : আলোকচিত্র, প্রবন্ধ
প্রকাশকাল : ২০২৫
প্রকাশক : কথাপ্রকাশ
দাম: ৭০০ টাকা।
বইটি কিনতে চাইলে:
আলোকচিত্রপুরাণ (Alokchitrapuran) – বাহিরানা